বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

সু চিকে আন্তর্জাতিক আদালতে তোলার আহ্বান শিরিন এবাদির

রিপোটারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ জুন, ২০১৮
  • ১০৮ বার

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে শিরিন এবাদি বলেছেন, আমি মনে করি গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক ও নিরপেক্ষ আদালতে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা হিসেবে অং সান সু চি ও সেনাপ্রধান জেনারেলকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।

শুক্রবার (১ জুন, ২০১৮) ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে রোহিঙ্গা শরণার্থী, মানবাধিকার কর্মী, আন্তর্জাতিক আইনজীবী, ফ্রান্সের নাগরিক ও রাজনীতিকদের উদ্দেশে মূল বক্তা হিসেবে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে ইরানের এই নোবেলজয়ী মানবাধিকার কর্মীর। তিনি বলেছেন, আমি আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে সবার কাছে ওই বার্তাই পৌঁছে দেবো।

বিশ্বের রাষ্ট্রবিহীন বৃহৎ জনগোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গাদের উল্লেখ করে শিরিন এবাদি বলেছেন, তারা ধীরগতির গণহত্যার শিকার হয়েছেন।

ইয়েমেনের নোবেলজয়ী ও মানবাধিকার কর্মী তাওয়াক্কুল কারমান এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের মানবাধিকার কর্মী ম্যারেইড ম্যাগুয়ারের সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজার সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শিরিন এবাদি বলেন, ‘২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার আগে সেনাবাহিনীর হাতে গণধর্ষণের শিকার এবং গণধর্ষণ থেকে বেঁচে আসা ১০০ রোহিঙ্গা নারী ও তরুণীর সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেছেন তারা।

‘আমরা প্রথম দিকের ভয়াবহ গল্পগুলোর নোট টুকে নিতে ভুল করেনি। যদিও আমরা উত্তর রাখাইনের বিভিন্ন প্রান্তের ও বিভিন্ন পরিবারের প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিপীড়নের শিকার নারী ও তরুণীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’

তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেখানে একটি ধারণা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও জনপ্রিয় করে তুলেছে। সেটি হলো আদিবাসী মুসলিম জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাখাইনে ১৯৬০ সালের শুরুর দিক থেকে বসবাস করে এলেও তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করেছে সেনাবাহিনী।

ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতি

এবাদি বলেন, অং সান সু চি (মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী) নিজেও ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। সু চি এমন একটি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন যে দলটিতে মুসলিমদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। এবং দেশটিতে মুসলিম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীই একমাত্র লড়াই করছে; এমন ধারণা প্রচারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সু চি।

রাখাইনে সেনাবাহিনীর যৌন সহিংসতার অভিযোগ নাকচ করে দেয়ায় সু চির সমালোচনা করেছেন শিরিন এবাদি। সু চি গৃহবন্দি থাকাকালীন তার জন্য প্রতিবাদ করেছিলেন ইরানের এই মানবাধিকার কর্মী। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সু চি। এবং এটা আমাকে আশ্চর্যান্বিত করে যে, কীভাবে একজন মানবাধিকার কর্মী বছরের পর বছরে ধরে নিজেকে অত্যাচারীর ভূমিকায় হাজির করছেন। এখন তার নীরবতা নিরস্ত্র নিষ্পাপ মানুষদের গণহত্যাকে অনুমোদন দিচ্ছে।

রোহিঙ্গা নিপীড়ন

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে শুরু হওয়া দেশটির সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছেন। এদের অধিকাংশই শিশু ও নারী।

আন্তর্জাতিক দাতব্যসংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস বলছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাখাইনে কমপক্ষে ৯ হাজার ৪০০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে শুধুমাত্র সহিংসতার কারণে প্রাণ গেছে ৬ হাজার ৭০০ জনের (নিহতদের ৭১.৭ ভাগ)। নিহতদের মধ্যে ৭৩০ শিশু রয়েছে; যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

আর্কাইভ

June ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Dec    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© 2019, All rights reserved.
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট