সেই দুঃখে ভুলতে পারলেন মুশফিক?

0
5

মুশফিকুর রহিম উত্তরটা দিতেই হাসিতে ফেটে পড়ল সংবাদ সম্মেলন কক্ষ। বাংলাদেশ ক্রিকেট এক টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল গত কদিন। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট, সাকিব আল হাসানের নিষিদ্ধ হওয়া—গুমোট এক হাওয়া ঘিরে ধরেছিল বাংলাদেশকে। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উতরে যাওয়ার উপায় হিসেবে একটা জয় পেতে উন্মুখ ছিলেন খেলোয়াড়েরা?

স্নিগ্ধ হাসিতে মুশফিক পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে এমন করব নাকি?’ এমন জবাব শুনে বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকেরা তো বটেই, ভারতীয় সাংবাদিকদের যাঁরা বাংলা বোঝেন, হো হো করে হাসলেন। ভালো খেলার অনুপ্রেরণা খুঁজতে কেউই এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে চায় না। চান না মুশফিকও, ‘এমন পরিস্থিতি আমরা কেউ চাই না। শুধু ক্রিকেটে না, কোথাও এমনটা কেউ চায় না। এখান থেকে দৃষ্টি ফেরানোর একটাই উপায় ছিল, ভালো একটা জয়, ভালো একটা ম্যাচ বা ভালো লড়াই করা। ১৭-১৮ কোটি মানুষ আমাদের দিকে এ কারণে তাকিয়ে থাকে। আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চটা দেওয়ার। সামনেও যেন নিজেদের সেরাটা দিতে পারি।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে গত কটা দিন, সেটি থেকে উত্তরণের পথ হিসেবে যদি না হয় তবে কি বেঙ্গালুরুতে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই দুঃখে প্রলেপ দিতে এমন একটা ম্যাচ উপহার দিতে চেয়েছেন মুশফিক? দিল্লিতে ভারত জয়ের নায়ক বলছেন, ঠিক তা নয়। তবে আগের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছেন, ‘মানুষ ভুল করতেই পারে। তবে সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়াটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ওই ম্যাচের পর থেকে আমি কিছু ম্যাচে দলকে জিতিয়েছিও। সেগুলো আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে কী করেছি আর কী করা উচিত ছিল সেই অভিজ্ঞতাও হয়েছে। (কাল) ২০তম ওভার শুরু হওয়ার আগে আমি আর রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) কথা বলেছিলাম। আমরা পরিষ্কার ছিলাম যে কী করতে হবে। এবার আমরা ম্যাচ শেষ করতে পেরেছি। এটা ছিল আমাদের জন্য দারুণ ব্যাপার।’

মুশফিক একবার প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যদি এমন সুযোগ থাকত তবে ফিরে পেতে চাইতেন ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচটা। কাল ভারতকে হারানোর পর কি সেই ক্ষতে প্রলেপ পড়েছে? মুশফিক দুটি ম্যাচ এক বিন্দুতে মেলাতেই রাজি নন, ‘বিশ্বকাপের ম্যাচ আর দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ম্যাচ পুরোই আলাদা। ভারতের মতো শীর্ষস্থানীয় দলের সঙ্গে যখন খেলবেন তখন স্কিলের সর্বোচ্চ প্রদর্শনীই করতে চাইবেন। টি-টোয়েন্টিতে ওদের বিপক্ষে কখনো জিতিনি, এই শুরুটা খুব দরকার ছিল। এটা এখন হলো। অনেক দিন পরও হতে পারত এটা। এক দিন না দিন হতোই। আমরা খুশি সেই শুরুটা তো হলো। এখন একটা বিশ্বাস জন্মেছে টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ভারতকে হারাতে পারি।’

সেই বিশ্বাস নিয়ে এই সফরে আরেকটা ইতিহাস রচনা করতে পারবেন মুশফিকেরা? ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়! এ মুহূর্তে মুশফিকদের স্বপ্নটা দেখতে বাঁধা নেই। সিরিজের প্রথম ম্যাচটা হেরে যাওয়ায় ভারত খানিকটা ‘ব্যাকফুটে’! আজ সকালে তাই দিল্লি থেকে রাজকটে এক দল যাচ্ছে বড় এক স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। আরেক দল ঘুরে দাঁড়াতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here