Logo
HEL [tta_listen_btn]

ধূমপান নিয়ে ইসলাম যা বলে

ধূমপান মৃত্যু ঘটায়। বিষয়টি জেনেও মানুষ নিজ হাতে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। জাতিসংঘের মাদকবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধূমপানের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৫০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর পরও মানুষ ধূমপান ছাড়তে রাজি নয়। অথচ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(তোমরা) নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৫)

এই আয়াতে সরাসরি ধূমপানের কথা উল্লেখ না থাকলেও ধূমপান এমন একটি কাজ, যার মাধ্যমে মানুষ নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। অনেকে যুক্তি দিয়ে থাকেন, ধূমপান করে সবাই তো আর মারা যায় না। হ্যাঁ, সব ধূমপায়ী ধূমপানের প্রথম পুরস্কার মৃত্যু উপহার না পেলেও এর পরের পুরস্কারগুলো ঠিকই পান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সর্বজনীনভাবে এটি স্বীকৃত যে, ধূমপান যক্ষ্মা, ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা রোগের অন্যতম প্রধান কারণ।

এছাড়া ধূমপানে রয়েছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। ধূমপান ত্বকের একদম বাইরের দিকের ধমনিগুলোতে রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। ফলে ত্বকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনটুকুও পৌঁছায় না। যা অল্প বয়সেই মানুষকে বুড়ো বানিয়ে দেয়। এছাড়া সিগারেটের তামাকে থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যা মানুষের ত্বকের এলাস্টিন এবং কোলাজেনকে নষ্ট করে দেয়। সে কারণেই ধূমপায়ীদের ত্বকে বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সিগারেটের নিকোটিনের কারণে দাঁতের ঝকঝকে সাদা রং প্লাটে হলদেটে হয়ে যায়। ধূমপানের ফলে চুলেরও ক্ষতি হয়। গবেষণায় জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে যারা ধূমপান করছেন তাদের চুল বাকিদের তুলনায় অনেক পাতলা হয়। কারণ সিগারেট চুলের ডিএনএগুলোকে নষ্ট করে দেয়। এছাড়া ধূমপানের ফলে চোখের তলায় কালি, ‘ব্ল্যাকহেডস’-এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে হিমোগ্লোবিন বেশি পরিমাণে অক্সিজেন বহনে অক্ষম হয়ে পড়ে। যে কারণে শরীরের ক্ষত সারতেও অধিক সময় লাগে।

এ কারণে ইসলামী আইনজ্ঞরা ধূমপান করাকে মাকরুহ বলে থাকেন। (ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১১/৪০৬)। তাছাড়া এটি সর্বজনস্বীকৃত বিষয় যে, ধূমপান কোনো ভালো কাজ নয়। ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশেই জনসম্মুখে প্রকাশ্যে ধূমপান কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কারণ এর দ্বারা অধূমপায়ী ও শিশুদের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি তারাও পড়ে যান স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! যে সমস্ত পাক-পবিত্র (উত্কৃষ্ট) জিনিস আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দিয়েছি সেগুলো খাও এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। যদি তোমরা তারই ইবাদত করে থাকো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭২)।

এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, ধূমপান করা কোনো মুমিনের জন্য শোভা পায় না। কোনো মুমিন ধূমপান করে অন্যকে কষ্ট দিতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ অপরের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com