ধামরাইয়ে সাবেক এমপি ও তার স্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৯

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি এম এ মালেক ও তার স্ত্রী কেন্দ্রীয়  মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীনা মালেককে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ধামরাই দক্ষিণপাড়ার মুন্নু কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের যৌথ সভা ও মিছিল করে এ দাবি জানান নেতাকর্মীরা।

এ সময় বক্তারা বলেন, ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মালেক গত পাঁচ বছর এমপি থাকাকালীন সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা, জমি দখল, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।

তবে এম এ মালেক তার ও তার স্ত্র্রীর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন।

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মাসুম খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগে সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম রতন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র গোলাম করিব, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শফিক আনোয়ার গুলশান, উপজেলা আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ খান লাল্টু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর সাহেব আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর শহিদুল্লাহ, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন, সোমভাগ ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী, ধামরাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন, ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম, পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে এম এ মালেক এমপি থাকাকালীন সময়ে তার স্ত্রী মীনা মালেক ধারমাই পৌরসভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে বিরোধপূর্ণ জমি ক্রয় করেন। এ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রচার হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন সাকু, পৌর মেয়র গোলাম করিব, কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম ওই চ্যানেলে সাক্ষাতকার দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মীনা মালেক। ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এতে তারা মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হন। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে যৌথ সভার আয়োজন করে।

এ সময় সাবেক এমপি ও তার স্ত্রীকে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। এ ছাড়া বক্তারা আরো বলেন, সামনে ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ কোনো সভা-সমাবেশে এম এ মালেককে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।

এ সভায় আগামীতে বিভিন্ন ইউনিয়ন সম্মেলনে এম এ মালেককে বাদ দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মাসুম খানকে উদ্বোধক হিসেবে রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন সাকু বলেন, এম এ মালেক এমপি থাকাকালীন আমি, পৌর মেয়রসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীদের নামে মামলা করেছেন। ঠুনকো অজুহাতে নেতাকর্মীদের মারপিট করেছেন। এ ছাড়া দুর্নীতি করে তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তার সম্পদের অনুসন্ধান করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আহ্বান জানা তিনি।

ধামরাই পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, সাবেক এমপি এম এ মালেকের স্ত্রী মীনা মালেক পৌরসভার কোনো অনুমতি না নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে ভবন করার কথা একটি চ্যানেলে সাক্ষাতকার দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় আজ মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। এম এ মালেকের ইঙ্গিতে অসংখ্য নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। আমরা তাকে ও তার স্ত্রীকে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে সাবেক এমপি এম এ মালেক বলেন, আমার ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা। আগামী ৬ ডিসেম্বর ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনে আমি সভাপতি প্রার্থী। আমাকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।