গাজীপুরে এক স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন প্রধান শিক্ষককের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে অন্য স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রধান শিক্ষককের ওপর হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় সেক্রেড হার্ট ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হারুন-রশিদ বাদল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মবিনুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃস্পতিবার হারুন-অর-রশিদ বাদল একটি মাইক্রোবাসে করে আরও ৫-৬কে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান। তারা সরাসরি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে পড়েন। সেখানে তেমন কিছু না বলেই বাদল প্রধান শিক্ষক মবিনুলকে চেয়ার দিয়ে পেটানো শুরু করেন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যালয়টিতে ওই সময় বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। তবে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে তারা পরীক্ষা বর্জন করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে। তারা বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তবে সহযোগীদের মাধ্যমে গেটের তালা ভেঙে স্কুল থেকে মাইক্রোবাসটি নিয়ে চলে যান হারুন-অর-রশিদ বাদল। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে।
প্রধান শিক্ষক মবিনুল ইসলাম জানান, বাদলের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ বা কোনও যোগাযোগ নেই। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে থাকতে না পেরে তিনি এই হামলা করেছেন বলে তিনি মনে করছেন। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার কোনও হাত নেই বলেও তিনি দাবি করেন মবিনুল।
হারুন-অর-রশীদ বাদল প্রধান শিক্ষক মবিনুলকে ‘হালকা আঘাত’ করেছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এক বছর আগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে ৫ জনের একটি প্যানেল দিয়েছিলেন। প্যানেল যথারীতি জয়ী হয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক কমিটির তিন শিক্ষক প্রতিনিধিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সভায় অনুপস্থিত রাখে। ফলে ওই কমিটি গঠন করা যায়নি। এনিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। হাইকোর্ট রুল জারি করার পরও আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমেই বিদ্যালয় পরিচালনা করা হচ্ছে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষককের ওপর হামলার প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনা আক্তার জানান, শিক্ষকের ওপর হামলার খবর ফোনে পেয়েছি। তবে লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। ওই শিক্ষককে থানায় অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।
শিক্ষা বার্তা-আ.আ.হ/মৃধা